সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তার যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নগরে জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা সম্ভব: পরিকল্পনাবিদ আরিফুল ইসলাম
ঢাকা, ২৩ কার্তিক (৮ নভেম্বর) :
নগর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা পেশাজীবি, নীতি–নির্ধারকসহ সাধারণ মানুষের কাছে জনস্বাস্থ্য’কে সামনে রেখে টেকসই শহর ও জনবসতি বিনির্মাণে উৎসাহ ও প্রয়োজনীয় দিক–নির্দেশনা পৌছানোর লক্ষ্য নিয়ে এবছর দেশের নগর, অঞ্চল/গ্রামীণ পরিকল্পনাবিদদের জাতীয় পেশাজীবি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স মাসব্যাপী বিশ্ব নগর পরিকল্পনা দিবস উদযাপন করছে। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্বাচন করা হয়েছে “জনস্বাস্থ্যের জন্য নগর পরিকল্পনা”।
দিবসটি উপলক্ষ্যে ০৮ নভেম্বর ২০২০, রবিবার অনলাইন প্লাটফর্মে “জনস্বাস্থ্যের জন্য নগর পরিকল্পনা” শীর্ষক একটি সেমিনার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর সম্মানিত সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ এর সভাপতিত্বে উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব শরীফ আহমেদ এমপি। এছাড়াও গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে সচিব জনাব মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার এবং ব্র্যাক–আরবান ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম এর জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচীর পরিচালক মোঃ লিয়াকত আলী, পিএইচডি, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর উপদেষ্টা পরিষদ আহ্বায়ক পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. এ কে এম আবুল কালাম সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমান বৈশ্বিক করোনা মহামারী প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কথা বিবেচনায় রেখে এবারের সকল আয়োজন অনলাইন মাধ্যমে আয়োজন করা হবে মর্মে বি.আই.পি.-র পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
জনস্বাস্থ্যের জন্য নগর পরিকল্পনা– করনীয়সমূহ:
ভবনসমূহের ভেতর সূর্যের আলো, বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা করতে ইমারত সংশ্লিষ্ট আইন–বিধিবিধান ও নগর পরিকল্পনা প্রণয়ন করবার মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা
সকল শ্রেণী–পেশা–বয়সের মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে এলাকাভিত্তিক খেলার মাঠ, পার্ক, জলাশয়, উদ্যানের ব্যবস্থা এবং সেখানে সকলের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা
মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করবার লক্ষ্যে সামাজিকায়নের সুযোগ বৃদ্ধি করতে গণ–পরিসর, বিনোদন সুবিধাদি, কমিউনিটি সেন্টার তৈরী এবং নিয়মিত সামাজিক অনুষ্ঠানাদির আয়োজন করবার মাধ্যমে মানবিক জনবসতি ও সমাজ তৈরী করা।
কঠিন ও পয়ঃ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিচ্ছন্ন এলাকা ও পরিবেশ নিশ্চিত করবার মাধ্যমে রোগ নিয়ন্ত্রণ ও জনবসতির সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা
যথাযথ পরিকল্পনার মাধ্যমে এলাকাভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরী করার পাশাপাশি নগর এলাকায় সবার জন্য সাশ্রয়ী ও অভিগম্য স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সামাজিক বৈষম্য দূর করা।
সকলের জন্য সাশ্রয়ী ও মানসম্মত আবাসন নিশ্চিত করার মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা করা
নগর এলাকার বিদ্যমান নাগরিক সেবা ও কমিউনিটি সুবিধাদি, সড়ক ও ড্রেনেজ অবকাঠামো, পার্ক–খেলার মাঠ–জলাশয়–উন্মুক্ত স্থান প্রভৃতির পরিমাণের উপর কাংখিত জনসংখ্যা এবং এলাকাভিত্তিক জনঘনত্ব নির্ধারণ করার মাধ্যমে নগর পরিকল্পনা প্রণয়ন করা; অন্যথায় নগর এলাকার ভারবহন ক্ষমতার অতিরিক্ত জনসংখ্যার কারণে নাগরিক সুবিধাদি, অবকাঠামো, পরিবেশ, প্রতিবেশ প্রভৃতির উপর মাত্রাতিরিক্ত চাপের কারণে নগরের বাসযোগ্যতা ও জনস্বাস্থ্য বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে পারে।
বায় দূষণ, পানি দূষণ, শব্দ দূষণ, শিল্প দূষণ সহ সকল প্রকার পরিবেশ দূষণ বন্ধ করবার মাধ্যমে নগর এলাকায় বসবাসযোগ্য পরিবেশ তৈরী করার মাধ্যমে টেকসই ও স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন নিশ্চিত করার রাষ্ট্রীয় ও বৈশ্বিক লক্ষ্য অর্জন করা।
এবারের মাসব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় দেশের নগর, অঞ্চল ও গ্রামীণ পরিকল্পনাবিদ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল/গ্রামীন পরিকল্পনা বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পরিকল্পনা সম্পর্কিত উদ্ভাবনী ধারণা, নগর পরিকল্পনা ডিজাইন, পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট প্রামাণ্যচিত্র, স্নাতক পর্যায়ের থিসিস, বিতর্ক, কুইজ, পোস্টার, আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা এবং উন্মুক্ত চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা, ভার্চুয়াল সেমিনার ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ ইনস্টিউট অব প্ল্যানার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট পরিকল্পনাবিদ মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তার যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নগরে জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা সম্ভব। উপযুক্ত ভূমি ব্যবহার ও জনঘনত্ব নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নগরে বাসযোগ্যতা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করার বিষয়ে তিনি গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও সুষ্ঠু পরিকল্পনার আওতায় অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য নিশ্চিতকল্পে নগরের প্রতিটি ওয়ার্ডে পার্ক, খেলার মাঠ, জলাধার সহ উন্মুক্ত স্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। পরিকল্পিত বাংলাদেশকে গড়তে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে এবং দেশবাসীকে পরিকল্পনার উপকারিতা সম্পর্কে অবহিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেন এই নগর পরিকল্পনাবিদ।
সেমিনারের বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ ইনস্টিউট অব প্ল্যানার্সের উপদেষ্টা পরিষদের আহ্বায়ক পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. এ কে এম আবুল কালাম বলেন, নগর কেন্দ্রিক কর্মকান্ডের সাথে জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত। তাই নগর কেন্দ্রিক কর্মকান্ডে নগর পরিকল্পনাকে গুরুত্ব না দিলে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন না করলে মানববসতির নানাবিধ সমস্যা, স্বাস্থ্যঝুঁকি, পরিবেশগত ঝুঁকি থেকে উত্তোরণ সম্ভব নয়। তিনি জনস্বাস্থ্য থেকে শুরু করে উন্নয়নের প্রত্যেকটি অবকাঠামোগত সেক্টরে পরিকল্পনাবিদের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং পরিকল্পনার মাধ্যমে সামাজিক, মানসিক, পরিবেশগত জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রদান করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন।
ব্র্যাক–আরবান ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম এর জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচীর পরিচালক মোঃ লিয়াকত আলী, পিএইচডি বস্তির সাথে জনস্বাস্থ্য সমন্বয় নিয়ে বলেন, বস্তিতে যারা বসবাস করে তাদের কথা মাথায় রেখে জনসাধারণ কেন্দ্রিক পরিকল্পনা করতে হবে। বস্তিতে আলো–বাতাসের স্বল্পতা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা অসম্ভব। এছাড়াও কোভিড মহামারির ফলে নতুন বর্জ্য যুক্ত হয়েছে, যার সঠিক ব্যবস্থাপনা করতে হবে এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, বস্তিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, ইউটিলিটি সার্ভিসের সাথে সমন্বয়ের চেষ্টা এবং জলবায়ুর বিরুপ প্রভাব বিবেচনায় রেখে আবাসন প্রদান করার চেষ্টা করা হয়। দ্রুত নগরায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, জলাবদ্ধতা সহ নগরের সমস্যা গুলো চিহ্নিত করে পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করতে হবে।
সেমিনারের বিশেষ অতিথি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশ কে একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ উল্লেখ করে বলেন, প্রতিটি মন্ত্রণালয় আলাদা আলাদা ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করে, তাই মন্ত্রণালয়ের বিষয় গুলির সমন্বয় সাধনের মাধ্যমেই পরিকল্পিত নগরায়ন নিশ্চিত করা সম্ভব এবং সমস্যাগুলির বাস্তব এবং সঠিক সমাধান হবে। একটি নগরের স্বাস্থসহ জলবায়ু, আবাসন এবং পরিবহন ব্যবস্থা পরিকল্পনার উপর নির্ভর করে, সেই লক্ষ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় পরিকল্পনাবিদের প্রধান্য দিচ্ছেন এবং পরিকল্পনাবিদদের কর্মক্ষেত্র সৃষ্টির জন্য কাজ করছেন। আমাদের উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে সেই লক্ষ্যেই আমরা পরিকল্পনাবিদদের প্রাধান্য দিতে হবে এবং তাদের কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি করা হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনপুর্বক সেমিনারের প্রধান অতিথি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব শরীফ আহমেদ এমপি বলেন, আমাদের বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়তে হবে। শিল্পায়নে এবং অধিক জনসংখ্যার ফলে ব্যবহারযোগ্য জমির পরিমান দিন দিন কমে যাচ্ছে কিন্তু আমরা একটি স্বাস্থসম্মত দেশ প্রত্যাশা করি। একটি শহরের সকল সংস্থার যেমন যারা স্বাস্থ্য সেবা দিবেন, আবাসান তৈরি করবেন, পরিবহণ ব্যবস্থার দ্বায়িত্ব পালন করবেন এবং বিভিন্ন সরকারি সংস্থার মধ্যে ভাল পরিবেশের সাথে সম্পর্কযুক্ত থাকতে হবে তবেই নগরের সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। আমাদের সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে এবং পরিকল্পিত বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাধ্যমে স্বাস্থস্ম্মত দেশ নিশ্চিত করতে হবে বলে তিনি সকলকে আহ্বান জানান।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে অন্যতম জনবহুল ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশ; একই সাথে আমরা এখন মধ্য আয়ের দেশে উত্তীর্ণ হবার যাত্রাপথে আছি। উচ্চ নগরায়ণের প্রভাবে আমাদের শহরগুলো ক্রমশ বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে। দ্রুত নগরায়নের ফলে যানজট, জলাবদ্ধতা, পরিবেশ দূষণ যথা বায়ু, পানি, শিল্প ও শব্দ দূষণ, বর্জ্যের অব্যবস্থাপনা, সবুজায়ন হ্রাস পাওয়া, প্রাকৃতিক জলাধার এর দখল–দূষণ এবং নগর এলাকার তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সংক্রামক–অসংক্রামক সকল ধরনের রোগ দিনে দিনে বাড়ছে এবং একই সাথে নগর জীবনের চাপ, উদ্বেগ প্রভৃতির সামষ্টিক প্রভাবের ফলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক উভয় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই বাস্তবতায় আগামী দিনের বাংলাদেশে বাসযোগ্য নগর ও জনবসতি গড়ে তুলবার লক্ষ্যে জনস্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমাদের নগর পরিকল্পনায় নিম্নের বিষয়গুলোর উপর প্রাধিকার দিতে হবে।
ঐতিহাসিকভাবে নগর পরিকল্পনা ও জনস্বাস্থ্য একে অপরের সাথে সম্পর্কিত। নগর পরিকল্পনার উদ্ভব হয়েছিলো অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে অধিক শিল্পায়নের ফলে শহুরে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অবাসযোগ্য বসতি ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের ফলে সৃষ্ট মহামারী ও স্বাস্থ্য বিপর্যয় এর কারণে। নগর এলাকার অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং সংক্রামক রোগের বিস্তার হ্রাস করা এবং বাসযোগ্য স্বাস্থ্যকর জনবসতি গড়বার লক্ষ্যে নগর পরিকল্পনা এবং জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রগুলি পারস্পরিকভাবে সম্পর্কযুক্ত ছিল। তবে উনবিংশ শতাব্দীর শেষদিকে নগর পরিকল্পনা ও জনস্বাস্থ্যের সংযোগ ক্রমশ আলগা হতে থাকে এবং নগর পরিকল্পনা ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধি এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন এর দিকে মনোনিবেশ করে।
সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে করোনা’র ব্যাপক বিস্তারের ফলে জনস্বাস্থ্যের সাথে নগর পরিকল্পনা ও আমাদের নির্মিত পরিবেশের সম্পর্ককে পুনরায় আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে। জনস্বাস্থ্য কেবল স্বাস্থ্যগত বিষয় কিংবা স্বাস্থ্য অবকাঠামোর সাথে সম্পর্কযুক্ত বিষয় নয়, তার সাথে আমাদের শহরের সার্বিক পরিকল্পনা ও উন্নয়ন ব্যবস্থাপনার সরাসরি সংযোগ রয়েছে। পরিবেশ ও প্রতিবেশ’কে গুরুত্ব দিয়ে সকলের জন্য অন্তর্ভূক্তিমূলক জনবসতি ও নগর গড়বার মাধ্যমে যে জনস্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ সুরক্ষা দেয়া সম্ভব, তা ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রীয় ও বৈশ্বিক আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে।
এছাড়াও সেমিনারে অন্যান্যদের মধ্যে বি.আই.পি.-র যুগ্ম সম্পাদক পরিকল্পনাদি মোহাম্মদ রাসেল কবির, বোর্ড সদস্য পরিকল্পনাবিদ মোঃ আসাদুজ্জামান, পরিকল্পনাবিদ ইজাদুর রহমান কাজল প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন।