রাস্ট্রের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত ‘দুর্নীতিজাত অনুপার্জিত আয়’ এর উৎস,উপায় ও উপলক্ষ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ: এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম
ঢাকা, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২১:
টাকা সব সময় রঙীন। তবে যে টাকার আয় এবং আয়ের উৎস ঘোষনা না দিয়ে রাস্ট্রের প্রাপ্য কর ফাঁকি দেয়া হয় বা যায়, যে টাকা অবৈধভাবে অর্জিত, সে টাকাই কালো টাকা । মূলত এবং মূখ্যত এই কালো টাকাই যেকোন অর্থনীতিতে আয় বৈষম্য , প্রতারণা, অস্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ব্যত্যয়ের প্রমানক, অব্যবস্থাপনা দুর্নীতি ও ন্যয়নীতিনির্ভরতাবিহিনতারই সূচক এবং অর্থনীতিতে অন্তর্ভুক্তির পরিবর্তে বিচ্যুতির মাধ্যমে সমূহ ক্ষতি সাধনের প্রভাবক ভ‚মিকা পালন করে এ কালো টাকা ।
রাস্ট্রের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত ‘দুর্নীতিজাত অনুপার্জিত আয়’ এর উৎস,উপায় ও উপলক্ষ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ বা বন্ধ করা। অবৈধভাবে অর্জিত বা আয়ের জ্ঞাত সূত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন যেকোনো অর্থ-বিত্তকে কালো টাকা অভিহিত করার যে আইনি অবস্থানে রয়েছে রাস্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ সেটাই সাংবিধানিকভাবে বেশি যৌক্তিক । এর আলোকে দুর্বৃত্তায়নের ভয়াবহ বেড়াজাল থেকে আইনের আওতায় ’মার্জিনখোর রাজনীতিবিদ, ঘুষখোর সুশীল সেবক (আমলা) এবং মুনাফাবাজ/কালোবাজারি/চোরাকারবারি/ব্যাংকঋণ লুটেরা ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের’ অপরাধের শা¯িত বিধান করা হলে সমাজে ও অর্থনীতিতে একটা ইতিবাচক মেসেজ যাবে ।
এ পেক্ষাপটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়ার বিষয়টি নানান আঙ্গিকে বিচার বিশ্লেষণের অবকাশ উঠে আসে।
এ সকল মতামত উঠে এসেছে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম আয়োজিত “কালো টাকা সাদা হচ্ছে: অর্থনীতির লাভ, না ক্ষতি?” শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল
বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয়মাসে প্রায় ১০ হাজার ২২০ কোটি টাকা অপ্রদর্শিত আয় প্রায় সাড়ে নয়শ কোটি টাকা কর দিয়ে বৈধ করেছেন সাত হাজার ৪৪৫ জন করদাতা, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনো ঘটেনি। চলতি বছরের বাজেটে অপ্রদর্শিত আয় সম্পর্কিত আইনে পরিবর্তন আসায় করদাতারা অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করতে উৎসাহিত হয়েছেন বলে অনেকেই মনে করছে। কালো টাকা সাদা করার নৈতিকতা এবং অর্থনীতিতে এর প্রভাব নিয়ে বিতর্ক চলে আসছে। অনেকদিন ধরে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকলেও চলতি বছরে এই সুবিধা গ্রহণের এই উল্লম্ফন নতুন করে অর্থনীতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে এসেছে। অপ্রদর্শিত আয় বৈধ হবার ফলে দেশের অর্থনীতির কি প্রকৃতপক্ষে লাভ হচ্ছে, না লাভের চাইতে ক্ষতি বেশি হচ্ছে, তা নিয়েও রয়েছে নানা দৃষ্টিভঙ্গি।
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, আহ্বায়ক, এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ এবং সম্মাননীয় ফেলো, সিপিডি সংলাপে সভাপতিত্ব করেন। মো. শফিউল ইসলাম, এমপি, সদস্য, শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সাংসদীয় স্থায়ী কমিটি বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ড মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, সাবেক সভাপতি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং মো. ফরিদ উদ্দিন, সাবেক সদস্য (শুল্কনীতি), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সম্মানিত বক্তা হিসেবে সংলাপে উপস্থিত ছিলেন।
সম্মানিত আলোচক হিসেবে ছিলেন আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ, সভাপতি, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই); এম এস সিদ্দিকী, লিগ্যাল ইকোনোমিস্ট; তাবিথ আউয়াল, পরিচালক, মাল্টিমোড গ্রুপ; দৌলত আকতার মালা, বিশেষ প্রতিনিধি, দি ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস; মিরাজ আহমেদ চৌধুরী, হেড অফ প্রোগ্রাম ও কমিউনিকেশনস, এমআরডিআই; মোঃ আলমগীর হোসেন, সদস্য (আয়কর নীতি), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড; রিজওয়ান রাহমান, সভাপতি, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই); রেজাউল করিম চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক, কোস্ট ট্রাস্ট; সুশান্ত সিনহা, বিশেষ প্রতিনিধি, যমুনা টেলিভিশন লিমিটেড।
এছাড়াও কোর গ্রুপ সদস্যদের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ড ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, টি আই বি; সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, এপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড এবং আসিফ ইব্রাহিম, ভাইস-চেয়ারম্যান, নিউ এজ গ্রুপ।
রাস্ট্রের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত ‘দুর্নীতিজাত অনুপার্জিত আয়’ এর উৎস,উপায় ও উপলক্ষ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ বা বন্ধ করা। অবৈধভাবে অর্জিত বা আয়ের জ্ঞাত সূত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন যেকোনো অর্থ-বিত্তকে কালো টাকা অভিহিত করার যে আইনি অবস্থানে রয়েছে রাস্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ সেটাই সাংবিধানিকভাবে বেশি যৌক্তিক । এর আলোকে দুর্বৃত্তায়নের ভয়াবহ বেড়াজাল থেকে আইনের আওতায় ’মার্জিনখোর রাজনীতিবিদ, ঘুষখোর সুশীল সেবক (আমলা) এবং মুনাফাবাজ/কালোবাজারি/চোরাকারবারি/ব্যাংকঋণ লুটেরা ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের’ অপরাধের শা¯িত বিধান করা হলে সমাজে ও অর্থনীতিতে একটা ইতিবাচক মেসেজ যাবে ।
জরিমানা ছাড়া, অত্যন্তহ্রাসকৃতহারে কর প্রদান এর সুযোগ এবং ’অর্থের উৎস নিয়ে আয়কর কর্তপক্ষসহ অন্যকোন কতৃর্ পক্ষ কোন প্রশ্নউত্থাপন করতে পারবেন না ’ জাতীয় বিধান জারী বলবৎ থাকলে দেশ সমাজ ও অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বিশ্বখ্যাত অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্টিগলিত্জ এর কনসেপ্ট ‘নৈতিক বিপদ’ এর উপস্থিতি হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যাবে। ক্স কোন উদয়িমান অর্থনীতিতে উন্নয়ন অর্জনে সফল হওয়ার পরও যদি আয় ও সম্পদ বৈষম্য না কমে, বরং বাড়ে তাহলে বুঝতে হবে সেই অর্থনীতিতে এমন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে যার প্রতিষেধক ভ্যাক্সিন এর আবিষ্কার ও প্রয়োগের কোন বিকল্প নেই। দুর্নীতিজাত কালো টাকা লালন থেকে সরে না এলে আয় ও সম্পদ বণ্টনের ক্রমবর্ধমান বৈষম্য থেকে বাংলাদেশের মুক্তি মিলবে না। কালো টাকা সাদা করার মতো অনৈতিক কর্মকান্ডকে যৌক্তিকতা দেয়ার চেষ্টা না করাই সমীচীন।
’অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে, তব ঘৃণা তারে যেন ত ৃণসম দহে’ এই চিন্তা চেতনাকে আড়াল করতে ’শাক দিয়ে মাছ ঢাকা’র প্রবণতায় কালো টাকা সৃষ্টির প্রেরণা ও প্রযতœপ্রদানের নীতি সর্বতভাবে পরিত্যাজ্য ।
কালো টাকা সাদা করার বিশেষ সুবিধা ঘোষনা আসার পর বিগত সাত মাসের পরিস্থিতি পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলে দেখা যায় করোনাভাইরাস মহামারী আঘাত হানার পর বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পুঁজি পাচার অনেকখানি বিঘ্নিত ও শ্লথ হয়ে যাওয়ায় কালো টাকার মালিকরা তাদের কালো টাকার একটা অংশ ১০ শতাংশ কর দিয়ে সাদা করে দেশের রিয়াল এস্টেট, ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট, শেয়ারবাজার ইত্যাদি খাতে বিনিয়োগ করছে। ক্স মহামারী আঘাত হানার পর থেকে বৈধ চ্যানেলে প্রবাসী বাংলাদেশীদের রেমিট্যান্সপ্রবাহে যে ঢল নেমেছে সেটাই প্রমাণ করছে যে হুন্ডি প্রক্রিয়ায় বিদেশে পুঁজি পাচার শ্লথ হয়ে পড়েছে। ২০১৯ সালের ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্সের তুলনায় ২০২০ সালে বাংলাদেশে ২১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা এক বছরে ১৯ দশমিক ৪৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি।
এ অভূতপূর্ব রেমিট্যান্সের জোয়ার দেশের অর্থনীতিকে মহামারীর নেতিবাচক অভিঘাত থেকে সুরক্ষা দিয়ে চলেছে। ক্স ভারতের সি এন্ড এজির পর্যবেক্ষন অনুসারে বলা যায় সামান্য কিছুঅর্থদুর্নীতিবাজরা ১০ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ করে নিলে ওই বৈধকরণের নথিপত্রগুলো তাদের হাজার হাজার কোটি কালো টাকা নিরাপদে রেখে দেয়ার ভালো দালিলিক সুরক্ষা দিতে পারে। ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে কালো টাকা আড়াল করার ভালো ব্যবস্থার সুবাদে দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জনের মানেই হলো একটা সুনির্দিষ্ট সমঝোতা-নেটওয়ার্র্কেরসহায়তায় দুর্নীতিবাজরা নিজেদের সুরক্ষা-ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সমর্থহচ্ছে। এটি দৃশ্যত দুর্নীতিবাজদের জন্য সম্ভাব্য দুর্নীতি দমনের জাল থেকে পলায়নের পথ খুলে দেয়ার সামিল। এ ব্যবস্থা রাখার মাধ্যমে কালো টাকার মালিকদের সিগন্যাল দেয়া হচ্ছে যে এ সুবিধা নিলে তাদের দুর্নীতিকে দমন করা হবে না
কালো টাকা সাদা করার পদ্ধতি প্রক্রিয়া নিয়ে নানান মতভেদ যাইই থাকুক না কেন, এর যথা বিধি ব্যবস্থা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সামাজিক অর্থনীতি তথা রাস্ট্রের এখতিয়ার , সরকার পরিচালিত রাজনৈতিক অর্থনীতির নয়; কেননা কালো টাকা তো সরকারের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার সৃষ্টি, স্বচ্ছতা জবাবদিহী ও ন্যয় ন্যয্যতা নীতি নির্ভরতায় ব্যর্থতার প্রতিফল । সা¤প্রতিক নজির থেকে দেখা যায়, তুলনামূলক সুশাসন প্রতিষ্ঠার সুযোগ পাওয়ার পর হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইন, ইরান, নিকারাগুয়া, বলিভিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মত দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে উঠতে পেরেছে। এ সব দেশ প্রথম পর্বে কালো টাকাকে প্রযতœদিতে সাদা করাকে গুরুত্ব দিত, পরবর্তীকালে শক্ত হাতে কালো টাকার সৃষ্টির উৎস বন্ধ করার রাস্ট্রীয় প্রতিবিধান জোরদার করার ফলে সেসব দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নে চমকপ্রদ গতিস ার হয়েছে । আরো খোলাসা করে বলা যায়, যেমন সুহার্তোর ১৯৬৫-৯৮ সালের ৩৩ বছরের শাসনকে ইন্দোনেশিয়ার উন্নয়নতত্তে¡ ‘ক্রোনি ক্যাপিটালিজম’ আখ্যায়িত হত, গত দুই দশকে সর্বগ্রাসী দুর্নীতি কমিয়ে সুশাসন ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় সমর্থ হওয়ায় সেখানে এখন অর্থবহ উন্নয়ন স¤ভব হয়েছে বা হচ্ছে।
অপ্রদর্শিত অর্থ বনাম কাল টাকা: কালো টাকাকে কর প্রদানের সময় ’অপ্রদর্শিত অর্থ’ সংজ্ঞায়িত করে গুরুতর অপরাধটিকে হালকা করার অবস্থান নেয়াকে সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক বলে সমালোচনা হচ্ছে। সংবিধানের ২০(২) ধারায় বলা হয়েছে , ‘রাষ্ট্রএমন অবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা করিবেন, যেখানে সাধারণ নীতি হিসাবে কোন ব্যক্তি অনুপার্জিত আয় ভোগ করিতে সমর্থহইবেন না’। সংবিধানের এ বিধানমতে ‘অনুপার্জিত আয়’ যদি কালো টাকা হয় তাহলে কালো টাকার সংজ্ঞা ‘অপ্রদর্শিত অর্থ’ এবং এ সংজ্ঞা দুর্নীতির সঙ্গে কালো টাকার যে ওতপ্রোত সম্পর্ক রয়েছে সেটাকে অনেকটাই গৌণ বা লঘুকরে দিচ্ছে কিনা তা আইনবেত্তাদের দেখা এবং এর পরীক্ষা পর্যালোচনা প্রয়োজন বলে সুশীল সমাজ থেকে অভিমত প্রকাশ করা হয়েছ্।
তবে এটা অনস্বীকার্য যে অনেক সময় বৈধভাবে অর্জিত অর্থের ওপর যেমন জমিজমা, অ্যাপার্টমেন্ট, প্লট, দোকান ইত্যাদি রিয়েল এস্টেট ক্রয়-বিক্রয়ে প্রকৃ ত দাম না দেখিয়ে কম দাম দেখালে রেজিস্ট্রেশন খরচ, স্টাম্প খরচ, সম্পদ কর ও ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স ফাঁকি দেয়া যায়। এসব ক্ষেত্রে কালো টাকাকে ‘অপ্রদর্শিত অর্থ’ বলাই সংগত এবং তা প্রদর্শনের সুযোগ দেয়া যেতে পারে, তবে কোন অবস্থাতেই বিদ্যমান কর হার হ্রাস করে নয় , উপরন্তজরিমানা দিয়ে তো বটেই। প্রসঙগত যে , ২০০৭-০৮ অর্থবষের্ একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ( জুলাই-সেপ্টেম্বর , ২০০৮) প্রযোজ্য করসহ বছর প্রতি ১০শতাংশ হারে ( স¦ের্বাচ্চ ৫০ শতাংশ ) জরিমানা দিয়ে এ জাতীয় অপ্রদর্শিত আয় ’প্রদর্শন’ বা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। সময় শেষ হওয়ার পর যাদের কাছে অপ্রদর্শিত আয়ের টাকা পাওয়া যেত তাদের বিরুদ্ধে আয়কর আইনেই জেলজরিমানার ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছিল।
অর্থ আইন ২০২০ এর মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার যে সুযোগ ঘোষিত হয়েছে তা কার্যকর করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ তে ১৯অঅঅঅ ও ১৯অঅঅঅঅ নামে দুটি ধারা সংযোজন করেছে।
আয়কর পরিপত্র-১ এ এন বি আর বলেছে ধারা নাইটিন এ এ এ এ এর মাধ্যমে উৎসের ব্যাখ্যা ব্যতিরেকে সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। নতুন এ বিধান অনুযায়ী যে কোন ব্যক্তি করদাতা বিনয়োগকৃত অংকের ১০% হাওে কর পরিশোধ কওে পুজিবাজারে কোন সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকৃত অর্থেও উৎস নিয়ে আয়কর কর্তপক্ষ সহ অন্যকোন কর্তৃপক্ষ কোন প্রশ্নউতথাপন করতে পারবেন না। এ বিনিয়োগ অবশ্যই ১লা জুলাই ২০২০ হতে ৩০ জুন ২০২১ এর মধ্যে হতে হবে এবং বিনিয়োগের এক বছরের মধ্যে বিনিয়োগকৃত কোন অর্থ উত্তোলন করা যাবে না।
এন বি আর বুদ্ধিমত্তার সাথে মূলত, একুল ওকুল রক্ষার জন্য যে ৫ নং শর্তটি রেখেছে তা আইনবেত্তাদের সওয়াল জবাবের সুযোগ সৃষ্টি করবে। ক্স ধারা নাইনটিন এএএএএ সংযোজিত হয়েছে ’ অপ্রদর্শিত সম্পত্তি, নগদ অর্থ, ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিশেষ কর ব্যবস্থার বিধান। ১ জুলাই ২০২০ হতে ৩০ জুন ২০২১ এর মধ্যে রিটার্ন কিংবা সংশোধিত রিটার্ণের মাধ্যমে টেবিল ১ ( জমি) টেবিল ২ ( বিল্ডিং ) অপ্রদর্শিত স্থাবর সম্পত্তির জন্য বর্গমিটার প্রতি নির্দিষ্ট হারে এবং টেবিল ৩ এ পূর্বে অপ্রদর্শিত অস্থাবর সম্পত্তির জন্য ১০% হারে কর পরিশোধ করতে পারবেন। এ নিয়ে আয়কর কর্তপক্ষ সহ অন্যকোন কর্তৃপক্ষ কোন প্রশ্নউতথাপন করতে পারবেন না। এ ধারাতেও ৩নং শর্তটি আইনবেত্তাদের সওয়াল জবাবের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, রাজস্ব ও কর বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, বাবসায়ীদের প্রতিনিধি এবং অর্থনীতিবিদ সহ সংশ্লিষ্ট অংশীজন–এই ভার্চুয়াল সংলাপে অংশগ্রহণ করেবেন এবং তাদের মতামত ও মন্তব্য তুলে ধরবেন। এছাড়াও নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সহযোগী প্রতিষ্ঠানসহ এনজিও প্রতিনিধি, সমাজকর্মী, পেশাজীবি এবং গণমাধ্যমকর্মীসহ নাগরিক সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা এই সংলাপে উপস্থিত ছিলেন ।