বাংলাদেশ মাহেন্দ্রক্ষণ অতিক্রম করছে: মোস্তাফা জব্বার
ঢাকা, ২৭ মার্চ ২০২১ :
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, স্বাধীন বাংলাদেশের অভিযাত্রায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার ৫০ বছর উদ্যাপনের মধ্য দিয়ে এক মাহেন্দ্রক্ষণ অতিক্রম করছে বাংলাদেশ। সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের সময়ে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ এবং বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্ব নেতাদের মূল্যায়ন বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নের অগ্রগতির প্রতিফলন। জাতি হিসেবে এই প্রাপ্তি বিস্ময়কর বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী গতকাল বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর মো: মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভারতের কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুখেন বিশ্বাস, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মঞ্জুলা বেরা এবং অধ্যাপক
ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির ও অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন অধ্যাপক শোয়াইব জিবরান।
বঙ্গবন্ধু একটি মানবিক কল্যাণমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সারাজীবন আন্দোলন করেছেন এবং মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা ঠিক এটিই উল্লেখ করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, চেগুয়েভার, মাওসেতুং, হুচিমিন, লেলিন কিংবা কার্লমাক্সকে জীবনে অধ্যয়ন করেছি। এসব অধ্যয়নের ফলাফল মূল্যায়ন করে আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি বঙ্গবন্ধু ছিলেন অদ্বিতীয়।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষার কবর রচনা করতে চেয়েছিল স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। স্বাধীনতার ৫০ বছরের মধ্যে ২৯ বছর স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি এদেশের ক্ষমতায় থেকে দেশের অগ্রগতি কেবল ব্যাহতই করেনি দেশকে পাকিস্তান বানানোর পায়তারা করে। পঁচাত্তর পরবর্তী দীর্ঘ ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রব্যবস্থার রূপরেখা দাঁড় করান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে। এসময় দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার প্রয়াস চালান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। গত ১২ বছরে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। শেখ হাসিনার আজ নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে অগ্রগতির রোল মডেল। মন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ তথা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলতে ডিজিটাল দক্ষতাসম্পন্ন মানবসম্পদ তৈরি করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বঙ্গবন্ধু এবং বাংলার সংস্কৃতি অবিচ্ছেদ্দ্য উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু কেবল বাংলার নয় বঙ্গবন্ধু সারা বিশ্বে ৩৫ কোটি বাংলা ভাষাভাষী মানুষের অহংকার।
ঢাকা জিপিও’তে বঙ্গবন্ধুর ওপর প্রকাশিত ডাকটিকেট প্রদর্শনী
ঢাকা, ২৭ মার্চ ২০২১ :
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর ওপর প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকেট প্রদর্শনী আজ ঢাকা জিপিওতে শুরু হয়েছে। ডাক অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ফিলাটেলিক সংগঠনসমূহ এই প্রদর্শনীর আয়োজন করে। বছরব্যাপী পর্যায়ক্রমে দেশের সকল গুরুত্বপূর্ণ ডাকঘরে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে বলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানান।
মন্ত্রী আজ ভার্চুয়ালি ঢাকা জিপিওতে বঙ্গবন্ধুর ওপর প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকেট প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। এসময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো: আফজাল হোসেন, ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: সিরাজ উদ্দিন এবং বাংলাদেশ ফিলাটেলিক সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর ওপর প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকেটসমূহকে অতি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক সম্পদ উল্লেখ করে বলেন, ডাকটিকেটকে বাণিজ্যিক উপাদান হিসেবে দেখি না। ডাকটিকেট ইতিহাসের সাক্ষী। এটি ব্যক্তি দেশ, জাতি, যুগ ও সভ্যতার প্রকাশ ঘটায়। আমাদের ডাকটিকেট বিশ্বের ৩৫ কোটি বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জীবন জীবীকার ইতিহাস ঐতিহ্য প্রকাশ করছে।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, আগামী দিনের সমৃদ্ধ জাতি বিনির্মাণের শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তাদের হৃদয়ে ধারণ করাতে উদ্যোগ নিতে হবে। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তর বঙ্গবন্ধুর ওপর প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকেট থেকে বাঙালির মহামানব সম্পর্কে সহজে জানতে পারবে। এই তাগিদ থেকেই মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর ওপর প্রকাশিত ডাকটিকেট প্রকাশনার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর জীবনের অনেক অজানা অধ্যায় ধারণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, মুজিবনগর সরকার প্রকাশিত স্মারক ডাকটিকিট স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় অস্তিত্ব প্রকাশে অবিস্মরণীয় ভূমিকা রেখেছে। একাত্তরের ২৯ জুলাই মুজিবনগর সরকার এবং যুক্তরাজ্যের হাউজ অব কমন্স থেকে প্রকাশিত ভারতীয় নাগরিক বিমান মল্লিকের ডিজাইন করা ৮টি স্মারক ডাকটিকেট বিশ্বে আমাদের জাতিসত্তা, রাষ্ট্র ও মুক্তিযুদ্ধের প্রতিফলন ঘটিয়েছে।