বঙ্গোপসাগরের তলদেশ থেকে বেরিয়ে এলো নানা আবর্জনা : অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন নিয়ন্ত্রণের দাবি সেভ আওয়ার সি’র
ঢাকা, ২২ মার্চ ২০২১ :
সেভ আওয়ার সি’র উদ্যোগে সেন্টমার্টিনে আন্ডারওয়াটার ক্লিনআপ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সমুদ্রের জীববৈচিত্র সংরক্ষণে জনসচেতনতার অংশ হিসেবে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপে আন্ডারওয়াটার ক্লিনআপ কর্মসূচি পালন করেছে সমুদ্র বিষয়ক পরিবেশবাদী সংগঠন সেভ আওয়ার সি।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ডুবুরিরা সমুদ্রের তলদেশ পরিষ্কারের কাজে অংশ নেয়। সেখান থেকে বেরিয়ে আসে কম্বল, বস্তা, চিপসের প্যাকেট পানির বোতল নানা ধরনের অপচনশীল দ্রব্য। যা পরিবেশ রক্ষায় মারাত্মক হুমকি।
সোমবার (২২ মার্চ) সেন্টমার্টিনেরর পূর্বপাড়া এলাকায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে সমুদ্রতল থেকে মেরিন এক্সপ্লোরাররা কুড়িয়ে আনেন নানা আবর্জনা। পরে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে খুলে দেখানো হয় সেইসব আবর্জনা।
মেরিন এক্সপ্লোরার ও সেভ আওয়ার সি’র পরিচালক এস এম আতিকুর রহমান বলেন, কেউ আবর্জনা সমুদ্রে ফেলছে, কেউ আবার তা তুলতে সেন্টমার্টিন এসেছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে কখনো পুরো সমুদ্র রক্ষা সম্ভব হবে না। তবে স্বল্প পরিসরে আমাদের এ কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা পর্যটকদের সচেতন করতে চাচ্ছি। যেন তারা বুঝতে পারে কী পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে।
এ সময় বাংলাদেস নৌ বাহিনীর সাবেক লেফটেন্যান্ট আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ৩০ বছর আগে পেশাগত কাজে এই একই স্থানে আমি ডাইভ করেছিলাম। তখন এই জায়গাটি জীববৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ ছিল। সাগরে একবার নামলে বার বার নামতে মন চাইতো। কিন্তু আজ তার কিছুই পাইনি। শুধু দেখেছি আবর্জনা আর আবর্জনা। এছাড়া বড় বড় জাহাজের প্রপেলারের কারণে কোরালের ওপর সেডিমেন্ট পড়ে থাকতে দেখেছি, এটা আমাকে খুবই কষ্ট দিয়েছে।
সেন্টমার্টিন রক্ষা করতে হলে প্রচলিত গণপর্যটন নিয়ন্ত্রণ করা ও ট্যুরিজমের জন্য বড় জাহাজের অনুমোদন না দেয়ার দাবি করেন তিনি।
সেভ আওয়ার সি’র মহাসচিব মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক বলেন, সমুদ্রে ৪৭৫টির বেশি প্রজাতির মাছ রয়েছে বিভিন্ন তথ্যে উঠে এসেছে। তবে এখন ফিসারি ঘাটে ১৮-২০টির বেশি পাওয়া যায় না। এর জন্য সমুদ্র দূষণই দায়ী বলে আমরা মনে করি। সেন্টমার্টিনে পর্যটনের নামে যেভাবে দূষণ হচ্ছে, এতে সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের পাশাপাশি দ্বীপটিও দিন দিন হুমকির মুখে পড়ছে। তাই সমুদ্রের পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ সময় অন্যান্যদের উপস্থিত ছিলেন নৌ বাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত ডাইভার মো. জসীমউদ্দীন, যৌথ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক খোলা কাগজ-এর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক শাহাদাত স্বপন, জাগো নিউজ-এর ক্রীড়া সম্পাদক ইমাম সোহেল, ভোরের কাগজ-এর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক তানভীর আহমেদ, প্রকৃতি বিষয়ক গণমাধ্যম বেঙ্গল ডিসকভার-এর সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মিঠু, বাংলাভিশন-এর প্রাণ ও প্রকৃতি বিষয়ক প্রতিবেদক কেফায়েত শাকিল, স্কুবা ডাইভার কামরুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন, শান্ত মাহমুদ, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনের কারণে এ ধ্বংসযজ্ঞ চলছে বলে মন্তব্য করে দ্রুত এখানকার পর্যটক নিয়ন্ত্রণের দাবি জানান উপস্থিত আলোচকরা। অনুষ্ঠানে মিডিয়া পার্টনার ছিল-বাংলাভিশন, ভোরের কাগজ, দৈনিক খোলা কাগজ ও জাগোনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম।