ধর্মীয় সম্প্রীতি অক্ষুণ্ন রাখতে সকলকে সজাগ থাকতে হবে: ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
খাগড়াছড়ি, ৯ মার্চ ২০২১ :
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক বলেছেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি পূর্বেও ছিল, এখনও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। কারণ এদেশের মানুষ অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকেন। তারা অন্যের কল্যাণ কামনা করেন। কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী নিজেদের গোষ্ঠীগত অথবা ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারের জন্য ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের প্রচেষ্টা চালায়। এর মধ্য দিয়ে তারা সমাজে অস্থিতিশীলতা তৈরি করেন, অনৈক্য সৃষ্টি করেন। এ ক্ষেত্রে সমাজের দায়িত্বশীল ব্যক্তি বিশেষ করে জনপ্রতিনিধি, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, প্রশাসন, সুশীল সমাজ এর ব্যক্তিদের ধর্মীয় সম্প্রীতি অক্ষুন্ন রাখার বিষয়ে অত্যন্ত সজাগ থাকতে হবে যাতে করে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করে সমাজে অনেক অনৈক্য সৃষ্টি করতে না পারে।
প্রতিমন্ত্রী গতকাল খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশ ও সমাজের অগ্রগতি সাধিত হবে বাংলাদেশ তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্থাৎ ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা সক্ষম হব।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উন্নয়ন এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানামুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট এবং খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট নিজ নিজ সম্প্রদায়ের উন্নয়ন ও কল্যাণে বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
সারাদেশে প্রায় নয় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া, দেশের প্রায় ২০০০টি মন্দির সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এছাড়া প্যাগোডা, গীর্জাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, উন্নয়ন, মেরামত ও সংস্কারে বর্তমান সরকার বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। যার সুফল সকল সম্প্রদায়ের জনগণ ইতোমধ্যে পেতে শুরু করেছে। নেপালের লুম্বিনীতে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে একটি বৌদ্ধ বিহার নির্মার্ণের জন্য প্রায় ৬৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডা ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পসমূহের মাধ্যমে আগামী প্রজন্মকে প্রাক-প্রাথমিক ও নৈতিক শিক্ষা প্রদান করে ধর্মীয় ও নৈতিকতাসম্পন্ন যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে তথা উন্নত জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
সুধী সমাবেশে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানগণ, নির্বাহী কর্মকর্তাবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, শিক্ষক, এনজিও কর্মী, মানবাধিকারকর্মী সহ জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।