খাদ্যের দাবিতে জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের ছেলে সাদ এরশাদের রংপুর নগরীর দর্শনা এলাকার বাসভবন পল্লী নিবাস ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন শত শত নারী-পুরুষ। এছাড়া পল্লী নিবাস বাসভবনের সামনে রংপুর-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা।
সকাল ১০টা থেকে শত শত এলাকাবাসী ও রংপুর ৩ আসনের আদিবাসীসহ এলাকার বিভিন্ন স্তরের মানুষ তার বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। বিক্ষুব্ধ লোকজন মহাসড়কে ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন।
খাদ্যের দাবিতে এরশাদের পল্লী নিবাস ঘেরাও করে বিক্ষোভ
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ জীবিত থাকাকালে তিনি এলাকার গরিব সহায় সম্বলহীন মানুষসহ রংপুরের সব স্তরের মানুষের পাশে থাকতেন, মানুষকে সাহায্য দিতেন। অথচ তার ছেলে সাদ এরশাদ এমপি হওয়ার পর থেকে এলাকায় আসেন না। তিনি এলাকার মানুষের কোনও খোঁজ-খবরও নেন না। করোনাভাইরাস মহামারি আকারে দেখা দেওয়ার পর তিনি এলাকায় আসেননি, এমনকি খাদ্য সহায়তা বা ত্রাণ বিতরণের কোনও ব্যবস্থা নেননি।
খাদ্যের দাবিতে এরশাদের পল্লী নিবাস ঘেরাও করে বিক্ষোভ
কয়েকজন বিক্ষোভকারী একসঙ্গে বলেন, আমরা খাবারের অভাবে অনাহারে মারা যাচ্ছি। আর উনি ঢাকায় এসি রুমে বসে আয়েশি জীবন-যাপন করছেন। ভোটের সময় অনেক বড় বড় কথা বলেছেন। এখন সাদ কোথায়? ব্যক্তিগত তহবিল তো দূরের কথা, এমপির জন্য বরাদ্দ করা চাল কোথায়? এ ধরনের জনপ্রতিনিধি আমরা চাই না। অবিলম্বে তাদের খাবারের ব্যবস্থা না করলে তার বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি চলবে বলে ঘোষণা করেন বিক্ষোভকারীরা।
রংপুর নগরীর মডার্ন মোড় এলাকার মনোয়ার হোসেন বলেন, এরশাদ সাহেব বেঁচে থাকাকালে শুধু সাহায্যই করতেন না, তিনি মানুষের বাড়িতে বাড়িতে যেতেন। খোঁজ-খবর নিতেন। যতবার আসতেন যারা তার কাছে গেছে খালি হাতে ফিরে আসেনি। অথচ তার ছেলে ভোট নেওয়ার সময় বড় বড় কথা বলেছে। এখন আমাদের খোঁজও নেয় না।
খাদ্যের দাবিতে এরশাদের পল্লী নিবাস ঘেরাও করে বিক্ষোভ
একই কথা বলেন এরশাদ নগরের বাসিন্দা রহিমা বেগম, আনোয়ারা বেগমসহ অনেকে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাপার বেশ কয়েকজন নেতা বলেন, সাদ এমপি হওয়ার পর আমাদের কোনও খোঁজ নেন না। এমপি হওয়ার পর ২/৩ বার রংপুরে এলেও উনি নগরীতে দাওয়াত খেয়ে বেড়িয়েছেন। এখন দলের নেতাকর্মীদের ডাকেন না। নতুন নতুন কিছু সুবিধাভোগী আছে যারা দলের দুর্দিনে কোনও দিন মুখ দেখায় না, তারা এখন সাদ এরশাদের প্রিয় পাত্র। সে কারণে আমরাও তার খোঁজ-খবর রাখি না। পল্লী নিবাস ঘেরাও করার ঘটনায় আমরা ব্যথিত হলেও বলার কিছু নেই।
সার্বিক বিষয়ে জানতে জেলা ও মহানগর জাপার কোনও নেতাই কথা বলতে রাজি হননি।
সাদ এরশাদ ফোনে সাংবাদিকদের বলেন, এমপি হিসেবে আমাদের কোনও বরাদ্দ নাই। তবে ব্যক্তিগতভাবে যতটুকু পেরেছি সাহায্য করেছি। স্থানীয় নেতাকর্মী ও এলাকবাসীর খোঁজ-খবর না নেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।
কোতোয়ালি থানার ওসি আবদুর রশিদ বলেন, আমরা অবরোধের খবর শুনেছি। এলাকায় গিয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।